শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

সোনার বাংলা গড়তে জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

তরফ নিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’

বুধবার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করা। একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে। আসুন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’

রাষ্ট্রপতি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলসহ সকলকে সম্মিলিতভাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, কর্মচঞ্চল, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সকলের কাম্য। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্খার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি ১৮৭ পৃষ্ঠার বক্তব্যে বিভিন্ন খাতে সরকারের সাফল্য ও উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তারিখে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের বিপুল সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য-আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে জননন্দিত নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিনবদলের সনদ’ রূপকল্প-২০২১-এর বাস্তবায়নে শুরু হয় উন্নয়নের মহাসড়কে অভিযাত্রা। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ উপলক্ষ্যে বিরোধী শক্তি নাশকতামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে নানা অপতৎপরতা শুরু করে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। শুরু হয় ‘উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশ’-এর সুদীপ্ত অগ্রযাত্রা।’

চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্যবৃন্দ ও দেশবাসীকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য তিনি নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সশস্ত্রবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও ব্যক্তিবর্গ এবং এ কর্মযজ্ঞে সহায়তা প্রদানের জন্য গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য সকল ভোটার, বিশেষত মহিলা ও নবীন ভোটারদের তিনি অভিনন্দন জানান।

মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরের কাজে আত্মনিয়োগ করেন, তখনই কুচক্রীমহল জাতির পিতাকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে সদ্য-স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মবিকাশকে রুদ্ধ করে দেয়। পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারের সকল গ্লানি, কলঙ্ক, ব্যর্থতা পিছনে ফেলে সুদীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়, যার ফলে স্বৈরশাসন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধারার অবসান হয়। বিশ্বসমাজে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। কিন্তু ২০০১ সালে গঠিত সরকার উন্নয়নের বিপরীতে নিজেদের গোষ্ঠীস্বার্থে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের ধারাই অব্যাহত রাখে। ফলে, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পাঁচবছরের শাসনামলে সৃষ্ট অমিত সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটে।’

তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন সুসংহত ও সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি’ আইন বাতিল করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় কার্যকর করা হয়েছে। পলাতক আসামীদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলা এবং বিডিআর হত্যাকান্ড মামলার বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে এবং আদালত কর্তৃক দোষীদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। মাদক, জঙ্গিবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ‘রূপকল্প-২০২১’, দিনবদলের সনদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ আর্থসামাজিক উন্নয়নের সকল সূচকে রূপকল্পে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের শ্রেণিতে উত্তরণের সকল যোগ্যতা অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা বিপুলভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। সরকারের দক্ষ পরিচালনায় অর্থনীতির সকল সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের উপরে রয়েছে। চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক আট-ছয় শতাংশ। বাংলাদেশ আজ জিডিপি ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে বিশ্ব-অর্থনীতিতে ৩৩তম এবং জিডিপি’র আকারের ভিত্তিতে ৪১তম। বর্তমানে মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৭৫১ মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মদ্র্রার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপরে। অপরদিকে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।

জাতীয় বাজেটের আকার এবং রাজস্ব আহরণের পরিমাণ অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় বাজেট বর্তমান অর্থবছরে ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা এবং এডিপি ১ লক্ষ ৭৩ হাজার কোটি টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা এবং চলতি অর্থবছরে ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু, বিভিন্ন নদীর উপর সেতু এবং ফ্লাইওভার নির্মাণসহ অনেক বৃহৎ প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, গত দশ বছরে রপ্তানি আয় প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে ১৯৯টি দেশে ৭৪৪টি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি অর্জিত হচ্ছে। এ শিল্পে ৪০ লক্ষ শ্রমিক সরাসরি কাজ করে, যার প্রায় ৬০ ভাগ স্বল্প-সুবিধাভোগী নারী। দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন বাজার সৃষ্টি এবং পণ্য বহুমুখীকরণের জন্য ২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অতীতের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ বেড়েছে। ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ইপিজেডসমূহে ক্রমপুঞ্জিত প্রকৃত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা এবং রপ্তানির পরিমাণ ৫ লাখ ৯১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। বিগত ১০ বছরে শিল্পখাতে অভাবনীয় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিগত ১০ বছরে দেশে-বিদেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে দেশের অভ্যন্তরে মোট ১ কোটি ৩৪ লক্ষের অধিক এবং বিদেশে প্রায় ৮০ লক্ষ কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে।

তিনি বলেন, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিগত পাঁচবছরে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক খাদ্য গুদাম নির্মাণের ফলে ধারণক্ষমতা বর্তমানে ২১ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। গত পাঁচবছরে দেশের মোট ৩০ হাজার একরের অধিক অকৃষি খাসজমি ৫৮২টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এবং ৪৭ হাজার একরের অধিক কৃষি খাসজমি ৯৭ হাজার ৪৫০টি ভূমিহীন পরিবারের অনুকূলে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসন-সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে। ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮’ এবং ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে। গত ১০ বছরে প্রায় ৩৪ লক্ষ নারীকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি সবার জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বিস্তারিকভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১১১টি সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। পাঁচটি নার্সিং কলেজ স্থাপন ও ১৫টি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে নার্সিং কলেজে উন্নীত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার বাস্তবতা সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ গত ১২ মে সফলভাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। দেশে ৪জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালু হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোবাইল সিম গ্রাহক ১৫ কোটি ৭০ লক্ষ এবং ইন্টারনেট গ্রাহক ৯ কোটি ১৩ লক্ষ। ডাক ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করে ৮ হাজার ৫শ’টি ডাকঘরের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার ২০২০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার ৭৭৫ মেগাওয়াট এবং বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ৯২ শতাংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াট।

রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ ও প্রতীক্ষিত ৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ ৬২ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক চার-শূন্য কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের নির্মাণকাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ কিলোমিটার ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া জনগণের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারের নেয়া ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের চিত্র তিনি তুলে ধরেন।

মাদকমুক্ত দেশ বিনির্মাণে সরকার বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বহু সংখ্যক মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং মাদকপ্রবণ এলাকায় যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বচ্ছ পদ্ধতিতে উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ, যৌক্তিক বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ এবং দেশে-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থায় গতি সঞ্চারিত হয়েছে।

তিনি বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতীয় জীবনে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে। আশা করি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আরও সুসংহত ও গতিশীল হবে। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হেঁটেছি, সে পথেই বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com